সিবিএন:
কক্সবাজারে সড়কের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে হোটেল-মোটেল জোনের নালা নর্দমার ময়লা-আবর্জনা। কাদাগুলো ট্রাকে ভর্তি করে নিয়ে সোজা ফেলা হচ্ছে রাস্তা ভরাট কাজে। তাতে একদিকে যেমন ফাঁকি হচ্ছে সরকারী কাজে, অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে সামাজিক পরিবেশ। তোয়াক্কা করছে না নিয়মনীতির।
কলাতলী হোটেল মোটেল জোন থেকে বাসটার্মিনাল হয়ে লিংক রোড পর্যন্ত যে চার লেন সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে তাতে এই কাদামাটি ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
জেল গেইট ব্র্যাক নার্সারির সামনে সড়ক বিভাগের একটি ট্রাকে (ডি-টি ১৬) করে নালা নর্দমার কাদা মাটি ফেলতে নিয়ে যায়। তাতে বাধা দেন রিগান আরাফাত নামের এক সচেতন যুবক। কান্ডজ্ঞান বিবর্জিত এমন কাজের কড়া প্রতিবাদ করেন। ফেলতে না পেরে উল্টো ফেরত যেতে বাধ্য হয় কাদাভর্তি ট্রাকটি।
ট্রাকের একজনের নাম জিজ্ঞেস করলে তার নাম হামিদ বলে জানায়। সাথে আরো ৪ জনের মতো লোক ছিল। ঘটনাটি ছিল ১৫ দিন আগের। ওই সময় তারা আর কাদা ফেলবেনা বলে জানায়। কিন্তু সোমবার (২২ জুন) দুপুরে আবারো কাদা ফেলতে গেলে ধরা পড়ে রিগান আরাফাতের হাতে।
তিনি তাদের কাছে জানতে চান, কোন যুক্তিতে সড়কের উপর নালার কাদামাটি ফেলতেছেন? কেন অনিয়ম করতেছেন? তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিগান আরাফাত বলেন, সড়কে কাদা ফেলতে দেখে কিছুদিন আগে নিষেধ করেছি। বলেছে আর ফেলবেনা। আবারও তারা কলাতলি হতে বাসটার্মিনাল রোডের মাটি ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে কাদা দিয়ে। এতে করে পরিবেশের ক্ষতি এবং রাস্তার নির্মাণ কাজে অনিয়ম হচ্ছে।
তিনি বলেন, রাস্তার দুই পাশে বালির পরিবর্তে কাদা দেওয়া হচ্ছে। যা কিনা বর্ষার পানিতে সব কাদা রাস্তা ছেড়ে নেমে যাবে। কেউ দায়িত্ব নিয়ে হস্তক্ষেপ করলে পরিবেশ, দেশ এবং সরকারের উপকার হবে।
এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমার কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমাদের রাস্তার কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে সোল্ডারের কাজ। মূল রাস্তায় কাদা ফেললে সমস্যা হতো। গর্ত, খাদে কাদামাটি দিলে আরো শক্ত হবে। বালি-মাটি দিলে থাকবে না।
এরপরও রাস্তার কাজে কোন অনিয়ম হতে দেখলে জানাতে অনুরোধ করেন নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা।
২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর থেকে কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্ট থেকে লিংক রোড পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়ক চার লেন করার কাজ শুরু হয়েছে। সড়কটি পর্যটন এলাকা লাবনী পয়েন্ট থেকে কলাতলী হয়ে, বাইপাস-নতুন জেলখানা ও বাস টার্মিনাল দিয়ে লিংক রোড পর্যন্ত যাবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা।
কক্সবাজার সড়ক জনপদ বিভাগের অধীনে রানা বিল্ডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, মাঝখানে ১০ ফুট ডিভাইডার, দুপাশে ছয় ফুট করে ড্রেনসহ সড়কটি প্রশস্ত হবে মোট ৭১ ফুট।
মোট ২৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে প্রায় ৯০ কোটি টাকা জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাদে বাকি অর্থ সড়ক নির্মাণে ব্যয় করা হবে। গত ২২ সেপ্টেম্বর সড়কটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।